রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন
শ্রিংলার বক্তব্য
বিবৃতি ও বক্তৃতা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বক্তব্য

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বক্তব্য

অধ্যাপক এম. আবদুস সোবহান, উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়;

প্রধান অতিথি, স্বনামধন্য লেখক জনাব হাসান আজিজুল হক;

প্রধান অতিথি, শ্রী আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়;

প্রধান অতিথি, জনাব লিয়াকত আলী লাক, পরিচালক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি;

অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়;

অধ্যাপক ড. সোমনাথ সিনহা, নাট্যকলা বিভাগ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়;

ড. মো. আতাউর রহমান, থিয়েটার বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়;

এই অনুষ্ঠানের আয়োজক ড. আরিফ হায়দার, থিয়েটার বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

এবং

ভদ্রমহিলা ও মহোদয়গণ,

শুভ সন্ধ্যা,

আজ আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার বিভাগ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে খুবই আনন্দিত।

ভারত ও বাংলাদেশ অভিন্ন ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি, আত্মীয়তার বন্ধনে এক বিশেষ সম্পর্কে আবদ্ধ। সংগীত, সাহিত্য, নাটক, নৃত্যকলা আমাদের দু’দেশের মানুষের মধ্যে এক গভীর বন্ধন গড়ে তুলেছে, যা অপরিসীম।

ভারতীয় হাই কমিশন, ঢাকা এই বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিবছর, ভারত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স (আইসিসিআর), ইন্ডিয়ান টেকনিক্যাল এন্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন প্রোগ্রাম (আইটেক), আয়ুষ ও স্ব-অর্থায়ন স্কিমের আওতায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করে থাকে। হাজারো বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পেয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে আজ সুপ্রতিষ্ঠিত।

বস্তুত, আমি অনেকটাই নিশ্চিত যে, এই স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষক এই বৃত্তির আওতায় ভারতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও, ভারত সরকার বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীদের উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষাগ্রহণের জন্য বৃত্তি প্রদান করে থাকে। আজ অবধি প্রায় ১১,০০০ শিক্ষার্থী এই স্কিমের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন।

প্রতিবছর ১০০ সদস্যের একটি যুব প্রতিনিধি দল (যার অধিকাংশই শিক্ষার্থী) ভারতের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করে এবং উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাৎ করে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওই যুব প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিল বলে আমাকে জানানো হয়েছে। গতকাল আমাদের ১০০ নতুন বন্ধু ভারতের অনেক প্রিয় স্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশে ফিরেছেন।

এটি খুবই উৎসাহব্যঞ্জক যে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কাজ করছে। আমি জানতে পেরেছি যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি ভারতের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আসাম বিশ্ববিদ্যালয়, শিলচর; জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, নয়া দিল্লি; কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়) সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এধরনের সহযোগিতা শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে অন্তরঙ্গতা ও পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আমার পক্ষ থেকে, ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব’-এর মাধ্যমে দু’দেশের মানুষকে যুক্ত করার এই অনবদ্য প্রয়াসের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার বিভাগকে স্বীকৃতি এবং ধন্যবাদ না জানালেই নয়। এই নাট্যোৎসবে বাংলাদেশী থিয়েটার গ্রুপের পাশাপাশি ভারতীয় বিভিন্ন থিয়েটার গ্রুপের অংশগ্রহণ দেখে আমি আনন্দিত।

২০১৫ সালে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমরা সহায়তা করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আবারও এই অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত। বছরজুড়েই ভারতীয় হাই কমিশন তার নিজস্ব উপায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছে। আমরা সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাদ্যযন্ত্র, বই এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র প্রদান করেছি।

খুব সম্প্রতি আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত সংস্কৃত বিভাগের জন্য বই, কম্পিউটার, প্রিন্টার, ল্যাপটপ, প্রজেক্টর এবং ফটোকপিয়ার দিয়েছি। আমরা আরও কিছু করার সুযোগ পেলে আনন্দিত হব। পরবর্তীতে, যে কোন ধরনের সাহায্যের জন্য আমাদের সহকারী হাই কমিশন, রাজশাহীর মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো যাবে।

সবশেষে, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার বিভাগকে এই সুন্দর সান্ধ্য আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি আয়োজকদের এই চমৎকার উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি। এ সুযোগে আমি আপনাদের নববর্ষের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাতে চাই।

নমস্কার।

****