গনেশতলা রায়সাহেববাড়ি কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দিরে হাই কমিশনারের বক্তব্য বিবৃতি ও বক্তৃতা

গনেশতলা রায়সাহেববাড়ি কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দিরে হাই কমিশনারের বক্তব্য

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

গনেশতলা রায়সাহেববাড়ি কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দিরে হাই কমিশনারের বক্তব্য

[২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯]

শ্রী মনোরঞ্জন শীল গোপাল, মাননীয় সংসদ সদস্য,

শ্রী বিশ্বজিৎ কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক, কোতোয়ালী উপজেলা আওয়ামী লীগ

এডিসি

এসপি

ভদ্রমহিলা ও মহোদয়গণ

এই অভ্যর্থনার আয়োজন দেখে এবং আপনাদের ভালবাসা পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত।

আমি মাননীয় সংসদ সদস্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তার মূল্যবান সময় দিয়ে এখানে উপস্থিত থাকার জন্য।

এই সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য কোতোয়ালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিশ্বজিৎ ঘোষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আমার বর্তমান মেয়াদে দিনাজপুরে এটি আমার প্রথম সফর। আবারও এই সুন্দর শহরে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। আজকে ঐতিহাসিক কান্তজীউ মন্দির এবং নয়াবাদ প্রার্থনা করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।

আপনারা জানেন যে, ভারত সরকার এক কোটিরও বেশি ব্যয়ে একটি একতলা মাল্টিপারপাস কমিউনিটি হল তৈরি করছে (সঠিক পরিমাণ এক কোটি তেত্রিশ লাখ এগারো হাজার পাঁচশ তিরানব্বই)

আমরা আশা করি, কমিউনিটি হলটি এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ করবে এবং এর নির্মাণ কাজ যথাসময়ে শেষ হবে।

এর জন্য সমাজের সকলের একসাথে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি তাদেরকে একে অপরের আরও কাছাকাছি এনে দেবে। এক্ষেত্রে আমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের যৌথ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। স্বাধীনতার ও উন্নয়নের পথে আপনাদের সহযাত্রী হতে পেরে আমরা গর্বিত।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অভিন্ন সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ, আমাদের উভয় দেশের সাধারণ মানুষের ভবিষ্যতের জন্য একসাথে কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগাবে- কারণ আমরা দুই দেশই উন্নয়নের পথে সহযাত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে আট শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এছাড়াও, খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সড়ক, রেল ও নৌসংযোগ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি এবং মানব উন্নয়ন সূচকে বিশেষভাবে নারীর উন্নয়নে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে গেছে।

গত কয়েক বছরে, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মহাকাশ, তথ্য প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, সাইবার নিরাপত্তা এবং বেসামরিক পারমাণবিক শক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় ৯০টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ১৬টি উন্নয়ন সহযোগিতা প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে ভৈরব ও তিতাস সেতু নির্মাণ, আখাউড়া-আগরতলা রেল লাইন নির্মাণ এবং অতিরিক্ত ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ।

আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আজ প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সীমান্ত হাটের মত অভিনব আয়োজন সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে বাণিজ্য সহজ করে তুলেছে। মহান মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও ত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ, ভারতীয় সেনা হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা, পাঁচ বছরের ভিসা এবং মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি চালু করা হয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে এত বিশেষ করে তুলেছে আমাদের মানুষে মানুষে যোগাযোগ। দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগই এই সম্পর্কের চালিকা শক্তি। সম্পর্কের এই দিকটি আরও এগিয়ে নিতে আমরা বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা সিলেট ও খুলনায় দু’টি নতুন সহকারী হাই কমিশন চালু করেছি এবং সারা দেশে ১৫টি ভিসা আবেদন কেন্দ্র রয়েছে।

আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শীঘ্রই ভারত সফর করবেন। আমরা আশা করি, তাঁর সফর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

সামনেই দুর্গাপূজা। প্রার্থনা করি, পূজা ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের জন্য শান্তি, সুখ ও আনন্দ বয়ে আনুক। আমি সকলের প্রতি আহবান জানাই, আপনারা দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করুন।

****