ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় খুলনা শহরের টেকসই উন্নয়নে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বিবৃতি ও বক্তৃতা

ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় খুলনা শহরের টেকসই উন্নয়নে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

খুলনা শহরের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে হাই কমিশনারের বক্তব্য

[ঢাকা, মার্চ ২০১৭]

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মাননীয় জ্যেষ্ঠ সচিব, কাজী শফিকুল ইসলাম

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব মো: মনিরুজ্জামান মনি

অতিরিক্ত সচিব (ইআরডি) জনাব মো. শাহ আমিনুল হক

এটি একটি অতি পরিতৃপ্তির বিষয় যে আজ আমরা বাংলাদেশের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর খুলনা’র টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে আরও একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছি। খুলনার খালিশপুর গালর্স কলেজিয়েট স্কুলের ব্যাপক উন্নয়নের বিষয়টি এই প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। এটি খুবই মানানসই যে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

খুলনার সাথে ভারতের সংযোগ তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের এই শহরটি শুধু কোলকাতার সন্নিকটেই অবস্থিত নয়, তৎকালীন বাংলার পশ্চিমাংশের সাথে শহরটির  যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক বন্ধন ছিল তার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর, দেশটি স্বাধীনতা লাভের একদিন পর, মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় খুলনা স্বাধীন হয়েছিল। খুলনার সঙ্গে ভারতীয় সংবিধানের রূপকার ড. বি. আর. আম্বেদকার-এর বিশেষ  যোগাযোগ ছিল কেননা দেশভাগের আগে ১৯৪৬ সালে সংসদে তিনি যে নির্বাচনী একলাকাসমূহের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সেগুলির মধ্যে ছিল খুলনা, যশোর, বরিশাল ও ফরিদপুর। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

আজ এখানে যারা উপস্থিত আছেন তাদের বেশিরভাগই জানেন যে, আজকের স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকটি পূর্বে স্বাক্ষরিত আর একটি সমঝোতা স্মারকেরই অনুরূপ যেটি ২০১৩-এর এপ্রিলে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের সরকার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য স্বাক্ষর করেছিল।

খুলনা উন্নয়ন প্রকল্পটির আওতায় ভারত সরকার খুলনার খালিশপুরে খালিশপুর গালর্স কলেজিয়েট স্কুলের জন্য মূলভবনসহ তিনতলা একটি ভবন নির্মাণের জন্য আর্থিক সহায়তা দেবে। পুরো প্রকল্পব্যয় হচ্ছে ১২.০৮কোটি টাকা। এই অর্থ স্কুলের সম্পূর্ণ আসবাবপত্র ক্রয় এবং ডেস্কটপ কম্পিউটার (পিসি), ল্যাপটপ, ফটোকপি মেশিন, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও একটি ৩৩-আসনবিশিষ্ট স্কুলবাস সরবরাহের জন্যও ব্যবহার করা হবে।

বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্প ও বন্দর নগরীগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে খুলনা।  যে এলাকায় স্কুল ভবনটি নির্মিত হবে সেটি একটি শিল্প এলাকা। আমরা আশাবাদী যে, স্কুলটি নির্মিত হলে ওই এলাকার কর্মীদের সন্তানেরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। এই এলাকার শিশুরা তাদের কাছাকাছি এই স্কুলে সহজেই যেতে পারবে। এই সমঝোতা স্মারকটি এবং খুলনা-কোলকাতা রেল সংযোগ, যেটি খুব শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে, খুলনার সঙ্গে ভারতের নিবিড় যোগাযোগ পুনরায় স্থাপন করবে।

ভারত সরকার এই ধরনেরই টেকসই প্রকল্প রাজশাহী ও সিলেট নগরীর জন্য গ্রহণ করতে যাচ্ছে যেগুলির প্রাক্কলিত ব্যয় হচ্ছে যথাক্রমে ২১.৯৫কোটি টাকা ও ২৪.২৮কোটি টাকা। ২০১৭-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি মাননীয় অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সিলেট নগরীর নবরূপায়নে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পেরে আমরা অতিশয় সম্মানিত হয়েছি। রাজশাহী নগরীর উন্নয়নে একই ধরনের আর একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে ২০১৭-এর ২৯ জানুয়ারি।

এই সুযোগে আমি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতি আমাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি, যেটির লাগাতার প্রচেষ্টার ফলে আজকের এই সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়েছে।

এই কথাগুলো বলে আমি শেষ করছি এবং এখানে উপস্থিত সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

*****